হরিচাঁদ ঠাকুরের অষ্টোত্তর শতনাম – শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১১ই মার্চ অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন মাতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর সমাজের পিছিয়ে পড়া নিম্ন শ্রেণীর মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। যেহেতু তিনি বৈষ্ণব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সেই কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন তিনি। তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতিকে বলা হত মাতুয়াবাদ। হরিচাঁদ ঠাকুরের দুই ছেলের নাম গুরুচাঁদ ঠাকুর ও উমাচরণ। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কলিযুগের শ্রী কৃষ্ণর একজন বিশেষ অবতার ছিলেন বলে তার ভক্তরা বিশ্বাস করতেন এবং তাকে বলা হতো পতিত পাবন। হরিচাঁদ ঠাকুর তার ভক্তদের উদ্দেশ্যে একটি বাণী প্রচার করেছিলেন যেটি হল, ‘মুখে হরি নাম কৃষ্ণ নাম হাতে কাম’। তবে হরিচাঁদ ঠাকুর কখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেনি। মাতুয়া সম্প্রদায়ে হরিবোল কথাটির অর্থ এখানে শ্রী হরি বিষ্ণুর কথা বলা হয়েছে।
উপরে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। তবে আজ আমরা আপনাদের সামনে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অষ্টোত্তর শতনাম বা হরিচাঁদ ঠাকুরের ১০৮ টি নাম তুলে ধরেছি। আসুন এক নজরে দেখে নিন হরিচাঁদ ঠাকুরের অষ্টোত্তর শতনাম বা হরিচাঁদ ঠাকুরের ১০৮ টি নাম –
হরিচাঁদ ঠাকুরের অষ্টোত্তর নাম
১. রামকান্ত রাখে নাম ‘বাসুদেবেম্বর’।
২. ‘পূর্ণ হরিচাদ’ নাম ধরাতে প্রচার।
৩. হরিদাস’ বলে ডাকে পিতা যশোমন্ত্র।
৪. মাতা অন্নপূর্ণা ডাকে ‘হরি প্রাণবন্ত’।
৫. গোলক রাখিল নাম ‘জয় গৌর হরি।
৬. দশরথ রাখে নাম ‘পর ব্যাথা ধারী’।
৭. শ্রীনন্দ দুলাল বলে ব্রজ মহামতি।
৮. রাখাল বালক ডাকে রাখালের পতি।
৯. হীরামন রাখে নাম ‘কমল লোচন’।
১০ নাটুবর রাখে নাম ‘জীবের জীবন’।
১১. বিশ্বনাথ রাখে নাম ‘প্রাণ দাতাহার।
১২. দীননাথ নাম রাখে ‘দীনবন্ধু হরি’।
১৩. রামরত্ন রাখে নাম ‘নদীয়ার গোরা।
১৪. লোচন রাখিল নাম ‘হরি ননী চোরা’।
১৫. মৃত্যুঞ্জয় রাখে নাম ‘মদন মোহন’।
১৬. ‘কর্ণধর’ বলে ডাকে গোঁসাই বদন।
১৭. মহানন্দ রাখে নাম ‘ক্ষীরদ বিহারী।
১৮ শ্রীরামভরত বলে সূত্রধর হরি’।
১৯. চৈতন্য রাখিল নাম ‘দর্পচূর্ণকারী।
২০, শ্রীরাম কুমার বলে ‘হরি বিষ হরি”।
২১. ভারক রাখিল নাম’ গৃহীব্রহ্মচারী।
২২. অশ্বিনী রাখিল নাম ‘বাঁকাসখাছরি’।
২৩. বুদ্ধি মন্ত রাখে নাম ‘বাবা জগবন্ধু’।
২৪. মঙ্গল রাখিল নাম ‘ছরি প্রেম সিন্ধু’।
২৫. শ্রীহরি ওঝার ওঝা বলে কালাচাঁদ।
২৬. শ্রীউমাচরণ বলে ‘আকাশের চাঁদ’।
২৭. শান্তিমাতা রাখে নাম ‘দেব নারায়ন।
২৮. কেনাই রাখিল নাম ভক্তপ্রাণধন’।
২৯. মালাদেবী রাখে নাম ‘স্বয়ং ভগবান’।
৩০. রামকৃষ্ণ রাখে নাম ‘হরিচাঁদ প্রাণ’।
৩১. উদয় পাগল বলে ‘শ্রীমধুসূধন’।
৩২. হরিপাল রাখে নাম ‘পতিত পাবন’।
৩৩, লালচাঁদ রাখে নাম ‘ছরি তমোনাশ’।
৩৪. ‘জগৎ পালক’ বলে দাদা কৃষ্ণদাস।
৩৫. গোলক কীৰ্ত্তনে বলে ‘তারক ব্রহ্মহরি।
৩৬. অক্ষয় রাখিল নাম হরি পুরী পুরী।
৩৭. ভবানী রাখিল নাম ‘পিতা মৃত্যুঞ্জয়’।
৩৮. দারুব্রহ্ম বলে ডাকে ভক্ত পান্ডাদ্বয়।
৩৯. জানকী রাখিল নাম ‘দুৰ্ব্বাদল শ্যাম’।
৪০. চন্দ্ৰকান্ত রাখে নাম ‘ধনুধারী রাম’।
৪১. শ্রীগুরুচাঁদ রাখে নাম ‘অনাদির মূলা।
৪২. সত্যভামা রাখে নাম ‘অকুলের কুল’।
৪৩. কোষ্ঠীস্বর রাখে নাম ‘স্বয়ং অবতার’
৪৪. রামচাঁদ রাখে নাম ‘হরিমূলাধার’।
৪৫. জগদিশ রাখিল নাম হরি ইচ্ছাময়।
৪৬. যুধিষ্ঠির রাখে নাম ‘হবি দয়াময়’।
৪৭. কমল রাখিল নাম ত্রিভঙ্গ কানাই’।
৪৮. পাবর্তী রাখিল নাম ‘চৈতন্য গোঁসাই।
৪৯. ভিকমাতা রাখে নাম ‘ভুবন মোহন”।
৫০. ব্রহ্মণ্য দেবের দেব বলে দ্বিজগণ।
৫১. রামধন রাখে নাম ‘নিদানের বন্ধু।
৫২. স্বরূপ রাখিল নাম ‘করুণার সিন্ধু’।
৫০. কামিনী রাখিল নাম ‘হরি চিন্তামণি’।
৫৪. ভুজঙ্গ নাচায়ে হোলো ‘ভুজঙ্গের মণি’।
৫৫ নায়েরী রাখিল নাম ‘বাঞ্ছাপূর্ণকারী’।
৫৬. মহেশ রাখিল নাম শ্রীমুরারী হরি’।
৫৭. চকমন রাখে নাম ‘হরি রক্ষাকারী’।
৫৮. জয়চাঁদ রাখে নাম ‘মহাবীর হরি’।
৫৯. গোবিন্দ রাখিল নাম ‘মনপ্রাণ আত্মা’।
৬০. বিধবা রমনী বলে ‘হরি ত্রাণ কর্তা’।
৬১ শ্রীউদয় বালা বলে ‘ব্রহ্ম সনাতন’।
৬২. ‘ভবপারের মাঝি’ বলে ভকত ভজন।
৬০, শ্রীবংশী রাখিল নাম ‘অন্তর্যামী হরি।
৬৪. শ্ৰীনব গোপাল বলে ‘পারের কান্ডারী’।
৬৫. কাশীশ্বরী রাখে নাম ‘প্রাণকান্ত হরি।
৬৬. অক্রুর রাখিল নাম ‘হরিচক্রধারী’।
৬৭ মহানন্দ রাখে নাম অমৃতের খনি’।
৬৮. ‘বাঞ্ছাকল্পতরু’ বলে ভক্তা তীর্থমণি।
৬৯. আনন্দ রাখিল নাম দুর্ব্বলের বল’।
৭০. দুঃখিনী রমনী বলে ‘ঠাকুর দয়াল’।
৭১. অলকা রাখিল নাম ‘মহাশক্তিধারী।
৭২ শোভনা রাখিল নাম ‘জ্যেতির্ময় হরি।
৭৩. নকুল রাখিল নাম ‘অকুল কান্ডারী’।
৭৪. যাদব রাখিল নাম চতুর্ভূজধারী।
৭৫. গোপাল রাখিল নাম বিপদভঞ্জন।
৭৬. আনন্দা রাখিল নাম ‘দুঃখিনীর ধন।
৭৭. হরিবর রাখে নাম ‘নয়নের মণি’।
৭৮. ‘ভকত বৎসল’ বলে ডাক্তার তারিনী।
৮৯. দেবীচাদ রাখে নাম ‘চারু চন্দ্রানন’।
৮০, অমৃত রাখিল নাম ‘পুরুষ মহান’।
৮১. বিচরন রাখে নাম ‘জগতের পিতা।
৮২. ইন্দুমতী রাখে নাম ‘প্রাণের দেবতা’।
৮৩. বিপিন রাখিল নাম ‘পদ্মরাণ মণি।
৮৪. তিন কড়ি রাখে নাম ‘হৃদয়ের মণি’।
৮৫. কাঞ্চন রাখিল নাম জগতের পতি’।
৮৬. ধীরেন্দ্র রাখিল নাম ‘অগতির গতি’।
৮৭. ভরত রাখিল নাম ‘জগৎ জীবন’।
৮৮. রূপচাঁদ রাখে নাম ‘মনুষ রতন’।
৮৯. পরিক্ষীৎ রাখে নাম ‘দয়ার সাগর’।
৯০. মালঞ্চ রাখিল নাম ‘প্রভু সৰ্ব্বেশ্বর।
৯১. রমনী রাখিল নাম ‘শমন দমন’।
৯২. পাষন্ডীরা রাখে নাম ‘পাষন্ড দলন’।
৯৩, যজ্ঞেশ্বর রাখে নাম ‘প্ৰভু কমলাখি’।
৯৪. রতন রাখিল নাম ‘মন প্ৰাণ পাখি’।
৯৫. শ্রীরাম চরন বলে ‘ভকত মোহন’।
৯৬. কৃষ্ণধন রাখে নাম ‘অধম তারন।
৯৭. তপস্বী রাখিল নাম ‘প্রভু গুণধাম’।
৯৮. ‘বিশ্বপতি বলে ডাকে ভক্ত চিন্তারাম।
৯৯. সাধুবৈদ্য রাখে নাম অনাথের নাথ।
১০০, রজনী রাখিল নাম ‘প্ৰভু জগন্নাথ’।
১০১. যাদব মল্লিক বলে ‘মহাভাব ময়’।
১০২. শ্রীকুঞ্জ রাখিল নাম ‘প্রভু প্রেমময়।
১০৩. রাধ্যাখ্যাপা রাখে নাম ‘ব্রহ্ম পরাৎপর।
১০৪. ব্রহ্মণ উকিলে বলে ‘প্রভু জাতিশ্বর’।
১০৫ শ্রীনীলরতন বলে ‘প্ৰণ কৃষ্ণধন।
১০৬. কুলের কামিনী ডাকে ‘ব্রজের জীবন’।
১০৭. সিন্ধুমণি রাখে নাম ‘ব্রজনীল মণি’।
১০৮. ভক্তগনৈ রাখে নাম ‘ভক্ত শিরোমনি’।
আমাদের শেষ কথা
হরিচাঁদ ঠাকুরের অষ্টোত্তর শতনাম বা হরিচাঁদ ঠাকুরের ১০৮ নাম সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই নিবন্ধটি আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।