সোনার তরী কবিতা, বাংলা কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, সোনার তরী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী কবিতা | Sonar Tori Kobita (Poem)

সোনার তরী কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Sonar Tori Kobita (Poem)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত সোনার তরী কবিতা -টি “সোনার তরী” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা এই কাব্যটি বাংলা সাহিত্যের একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। “সোনার তরী” কাব্য গ্রন্থটি বাংলা কাব্যের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কাব্য। ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে এই কাব্য গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিয়ালদহের কুঠির বাড়িতে অবস্থান করেন। এই সময়কালের মধ্যে তিনি যে সমস্ত কাব্যগ্রন্থ গুলি রচনা করেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হল ‘সোনার তরী’। সোনার তরী কবিতা -টি সুদীর্ঘকাল ধরে বহুবার আলোচনা ও ব্যাখ্যায় নতুন নতুন তাৎপর্যে অভিষিক্ত হয়েছে। সোনার তরী কবিতার মধ্য দিয়ে কবির জীবনদর্শন অপূর্ব মহিমায় প্রকাশিত হয়েছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতাটির মধ্য দিয়ে বুঝিয়েছেন, মহাকালের স্রোতে জীবন-যৌবন ভেসে যায়, কিন্তু মানুষের সৃষ্ট কর্ম বেঁচে থাকে অনন্তকাল।

সোনার তরী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।

একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা–
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে–
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।

ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।

যত চাও তত লও তরণী-‘পরে।
আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে–
এখন আমারে লহ করুণা করে।

ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি–
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।

আরও পড়ুনঃ লিচু চোর কবিতা – কাজী নজরুল ইসলাম (Lichu chor)


সোনার তরী কবিতা -টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।