খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের অপকারিতা, খেজুরের পুষ্টিগুণ, খেজুর, খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা,
খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টিগুণ 

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা – আমাদের সকলেরই সুপরিচিত একটি সুস্বাদু ফল হল খেজুর। তাছাড়াও, এই খেজুরকে ওয়াটার ফুডও বলা হয়ে থাকে। খেজুর মূলত সৌদি আরব, ইরাক, ইরান ও মধ্য প্রান্তের কিছু দেশে উৎপাদন হয়ে থাকে। এর সাথে সাথে এশিয়া মহাদেশের কিছু কিছু দেশ যেমন ভারত,বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান -এর মতো দেশে সামান্য পরিমাণে চাষ হয়ে থাকে খেজুর। খেজুরের উপকারিতা অন্যান্য ফলের চেয়ে শতেক গুণ বেশি, যার জন্য প্রায় সকলেই খেজুর খেতে পছন্দ করেন। খেজুর এমন একটি ফল, যা অত্যন্ত সুস্থাদু এবং রুচিশীল। মানুষের শরীরে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এই খেজুর। পুষ্টিবিদদের মতে, মানুষের শরীরে ‘আয়রন’ -এর ঘাটতি কমাতে খেজুর খুবই উপকারী একটি ফল।

খেজুরের পুষ্টিগুণ 

খেজুরে উপস্থিত রয়েছে, ১.৮১ গ্রাম প্রোটিন, ২৭৭ গ্রাম ক্যালোরি ,কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ৭৫ মিলিগ্রাম, ফাইবার রয়েছে ৬.৭ গ্রাম। এছাড়াও ভিটামিন এ (Vitamin A) উপস্থিত রয়েছে ৩ শতাংশ এবং ভিটামিন বি (Vitamin B) রয়েছে ৬০.২৫ মিলিগ্রাম, তামা ০.৩৬ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ০.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫৪ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম রয়েছে ৬৯৬ মিলিগ্রাম।

পুরুষদের দেহে নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খনিজ সমৃদ্ধ এই খেজুর খুবই উপকারী। তাই প্রতিনিয়ত খাবারের তালিকায় খেজুর রাখতে পারেন সবাই। খেজুর খাওয়ার একাধিক উপকারিতা রয়েছে। আজ আমরা আপনাদের সামনে খেজুরের উপকারিতা নিয়ে হাজির হয়েছি। তো চলুন এক নজরে দেখে নিন খেজুরের উপকারিতা গুলি –

খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের অপকারিতা, খেজুরের পুষ্টিগুণ, খেজুর, খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা,
খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টিগুণ

খেজুরের উপকারিতা

প্রোটিন –

খেজুর আমাদের শরীরে খুব ভাল ভাবে প্রোটিন সরাবর করতে পারে। খেজুর হল প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি ফল। আমাদের দেহের জন্য অত্যাবশ্যক প্রয়োজনীয় একটি ফল হলো খেজুর। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে, যা আমাদের শরীরে পেশি গঠন করতে সাহায্য করে।

আয়রন

খেজুর হল একটি আয়রন সমৃদ্ধ একটি ফল। মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আয়রন। আয়রনের অভাবে মানবদেহে রক্তশূন্যতা দেখা যায়, যা মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। সেই জন্য খেজুর খাওয়া অত্যন্ত দরকারি। এছাড়াও খেজুরে উপস্থিত আয়রন হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম।

ক্যালসিয়াম –

মানুষের হাড় গঠন করতে খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। ক্যালসিয়াম মানব দেহের হাড় গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও খেজুরে উপস্থিত ক্যালসিয়াম শিশুদের দাঁতের মাড়ি গঠন করতে সাহায্য করে, সেই কারণে খেজুর শিশুদের জন্য খুবই উপকারী।

ফাইবার –

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। মানব দেহের ওজন কমাতে ফাইবারের ভূমিকা অতুলনীয়। ফাইবার অনেকক্ষণ ধরে পেটকে ভরা রাখে। যার ফলে অন্যান্য খাবার খেতে ইচ্ছে হয় না। মানুষের ওজন কমাতে সক্ষম খেজুর। তাই কিছু কিছু ডায়েট চার্টে খেজুরের নামও উপস্থিত আছে।

সংক্রমণ –

যকৃতকে কোন প্রকার ব্যাধি থেকে সংক্রমিত হওয়া থেকে রোধ করতে সক্ষম এই খেজুর। অ্যালকোহল জনিত যে কোন প্রকার বিষক্রিয়া থেকে নিরাময় দিতে পারে খেজুর। তাছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম খেজুর।

ক্যানসার প্রতিরোধ –

প্রাকৃতিক ভাবেই খেজুর একটি আঁশ সমৃদ্ধ ফল। তাই খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। যারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে থাকেন। তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কম। তাছাড়াও খেজুর মানুষের মুখগহ্বরের ভিতরে হওয়া ক্যান্সার রোধ করতে সক্ষম।

খেজুরের উপকারিতা, খেজুরের অপকারিতা, খেজুরের পুষ্টিগুণ, খেজুর, খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা,
খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টিগুণ
হৃদরোগ প্রতিরোধ –

বিশেষজ্ঞদের মতে খেজুরকে মানবদেহের হৃদপিন্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ বলে মনে করা হয়। খেজুরে উপস্থিত নানা ধরনের উপাদান মানবদেহের হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সেই কারণে আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে খেজুর খাওয়া অতি আবশ্য প্রয়োজন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে –

খেজুরে উপস্থিত রয়েছে নানা ধরনের ঔষধি উপাদান, যা মানুষের খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পেতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন খেজুর।

কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট –

খেজুরে কোনো প্রকার কোলেস্টেরল বা চর্বি থাকে না, যার ফলে শরীরে ওজন বা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেয়। খেজুর মানব দেহের জন্য খুবই উপোকারী আকটি ফল।

মস্তিষ্ক সচল রাখে – 

মানব দেহের মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত ও সচল রাখতে খেজুর খুবই উপকারি একটি ফল। কারণ খেজুরে উপস্তিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি (Vitamin B)। খেজুর ক্লান্ত শরীর -কে শক্তির জোগান দিতে প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করে।

রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ –

খেজুরে উপস্থিত আয়রন, রক্তশূন্যতার মত মারণ দায়ী রোগ থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম। সেই জন্য রক্তশূন্যতার মত মারণদায়ী রোগে যে সকল মানুষ জর্জরিত, তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী একটি ফল। মানব শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রনের প্রায় ১১ ভাগ আয়রন জোগান দিতে সক্ষম এই খেজুর।

হার্টের সমস্যা দূর করে –

যে সকল মানুষ হৃদ রোগে ভুগছেন তাদের জন্য জানানো হচ্ছে, স্বাস্থ্যের পক্ষে খেজুর খুবই উপকারী একটি ফল। কারণ যাদের হার্ট দুর্বল তাদের হার্টকে মজবুত করতে খেজুর খুবই কার্যকরী। প্রতিনিয়ত সকাল বেলায় খালি পেটে যদি খেজুরের জুস তৈরি করে খান। তাহলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই হার্টের সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে পারেন। আপনার যদি হার্টের সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

গ্লুকোজের অভাব দূর করে –

শরীরে গ্লুকোজের অভাব দূর করতে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম। যাদের শরীরে গ্লুকোজের অভাব রয়েছে তারা প্রতিনিয়ত সকাল বেলায় খালি পেটে ৫ থেকে ৬ টি করে খেজুর খেতে পারেন। কারণ খেজুর খুব দ্রুত শরীরে গ্লুকোজের অভাব পূরণ করতে পারে।

খুসখুসে কাশি দূর করে –

অনেক মানুষেরই প্রায় খুসখুসে কাশি হয়ে থাকে। তবে এই কাশি থেকে মুক্তি দিতে পারে খেজুর। প্রতিনিয়ত নিয়ম করে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম খেজুর, গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। তারপর সকালবেলায় খেজুর গুলিকে শরবত বানিয়ে খেয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত খেলে কয়েক দিনের মধ্যেই এর উপকার পাবেন।

ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায় – 

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সক্ষম খেজুর। কারণ খেজুরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি (Vitamin B)। অনেক মানুষেরই বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে বার্ধক্য ছাপ দেখা যায়। তবে প্রতি নিয়ত নিয়ম করে খেজুর খেলে বার্ধক্য ছাপ পড়ে না, বরঞ্চ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।


 আমাদের শেষ কথা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। এরকমই সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।