আদার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আদা ও লেবুর উপকারিতা – আমাদের সকলেরই একটি সুপরিচিত ভেষজ উপাদান হলো আদা। আদা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু কথায় আছে, “আদা সর্ব রোগ নিরাময়ের দাদা”। কারণ আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুন। আদা দিয়ে চা বা সবজিতে মসলা হিসেবে অথবা কাঁচা আদা আপনি খেতে পারেন। সব রকম ভাবেই আদা খাওয়া যায়, তবে আপনি এটি যেভাবেই খান না কেন, আপনার শরীরের দিক থেকে আদা একটি উপকারী খাদ্য বস্তু। আদার গুনাগুন সম্পর্কে যতই বলি না কেন, তবুও যেন কম হয়ে যায়।
আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভেষজ গুণ। সর্দি কাশির জন্য আদার উপকারিতা অপরিসীম। শুধু সর্দি কাশিই নয়, তাছাড়াও একাধিক রোগ নিরাময় করতে পারে আদা। ভেষজ ঔষধ হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। আদাতে রয়েছে – ভিটামিন এ (Vitamin A), বি৬ (Vitamin B6), সি (Vitamin C) ও ই (Vitamin E)। এছাড়াও রয়েছে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, এবং দস্তা ও সিলিকন জাতীয় খনিজ উপাদান। যার কারণে আদা সর্ব রোগের ঔষধ হিসেবে পরিচিত। আর সেই কারনেই আজ আমরা জানবো আদার উপকারিতা সম্পর্কে। আসুন এক নজরে দেখে নিন আদার উপকারিতা ও আদা ও লেবুর উপকারিতা গুলি –
আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যার কারণে আদা খাওয়ার ফলে সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যথার মতো সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত পরিমাণমতো আদার রস বার করে খেতে পারেন। পারলে আদা চা খান।
বাতের ব্যথা কমাতে আদার ভূমিকা অপরিসীম। আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা আমাদের দেহের হারকে মজবুত করে তোলে। যার ফলে বাতের ব্যথা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন। তারা প্রতিনিয়ত আদা খেতে পারেন।
আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে। আদা শরীরের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেয়, যার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
আদতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬। যা মলমুত্র জনিত সমস্যা দূরীকরণে সাহায্য করে। যারা মল মুত্র জনিত সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়ম করে আদা খেতে পারেন।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদা হলো একটি বৃহৎ সাহায্যকারী ভেষজ উপাদান। প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে আদাতে। যার ফলে আদা হৃদপিণ্ড ও হার্টের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত এটি সেবন করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
যারা ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। প্রতিনিয়ত সকাল ও বিকেল বেলায় এক কাপ গরম জলের সঙ্গে আদার রস এবং লেবুর রস মিশিয়ে চায়ের মত করে খেলে পরে কাশি কমে এবং কফ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সেক্সে রসুনের উপকারিতা
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সক্ষম আদা। যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিনিয়ত এক চামচ আদার সঙ্গে, পরিমাণ মতো লেবুর রস গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে চায়ের মত করে খেলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
অনেকেই আছেন যারা সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে বমি বমি ভাব অনুভব করেন। এছাড়াও কিছু কিছু মানুষ বিভিন্ন কারণে বমি বমি ভাব এর লক্ষনে ভোগেন। সেই সমস্ত মানুষদের জন্য আদার উপকারিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিনিয়তঃ দুইবেলা নিয়ম করে আদার রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে সামান্য গরম জলের সঙ্গে চায়ের মত করে খেলেই বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যারা যানবাহনে চড়লে বমি বমি অনুভব করে থাকেন তারা সঙ্গে করে আদা বহন করতে পারেন এবং বমি বমি ভাব হলে আদার টুকরো মুখে নিতে পারেন।
হাঁপানি ও ফুসফুসের সমস্যা দূরীকরণে আদার উপকারিতা অপরিসীম। যে সকল ব্যক্তিদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা হাঁপানি রয়েছে। এমন ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত আদার রস সেবন করতে পারেন। যারা হাঁপানি ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিনিয়ত সকাল ও বিকেল বেলায় এক কাপ গরম জলের সঙ্গে পরিমাণমতো আদার রস ও লেবুর রস এবং সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই উপকার পাবেন।
যারা আমাশয় ও পেটের ব্যথা জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভেষজ উপাদান। এক কাপ গরম জলের সঙ্গে পরিমাণ মতো আদার রস মিশিয়ে খেলে আমাশয় ও পেট ব্যথা দূর হয়। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিনিয়ত সকাল ও বিকেল বেলায় এক কাপ গরম জলের সঙ্গে পরিমাণমতো আদার রস ও লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথা কমাতে আদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। পিরিয়ড চলাকালীন অনেক মেয়েকেই তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। আদতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মেয়েদের এই পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথা কমাতে খুবই সাহায্য করে। এই সময় আদা দিয়ে চা খেলে অসহ্য যন্ত্রণা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
প্রত্যেকটি জিনিসের যেমন একটি ভালো দিক থাকে, তেমনই খারাপ দিকও থাকে। তাই আদার উপকারিতার পাশাপাশি আদার অপকারিতাও রয়েছে। আদা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত আদা খাওয়া মোটেই ঠিক নয়। অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে আসুন একনজরে দেখে নিন –
আজ আমরা জেনেছি আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। তবে আদা খাওয়ার নিয়ম কি আপনি জানেন? না জানলে জেনে নিন। আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভেষজ ঔষধি গুন। এটি প্রতিনিয়ত নিয়ম করে খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। সকাল ও বিকেল বেলায় লিকার চা এর সাথে আদা মিশিয়ে চা খেতে পারেন। আদা পিষে রস বার করে খাওয়া উচিত। অথবা কাঁচা আদার টুকরো গালে নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন। তবে এটি কোন রকম ঠান্ডা মেশিন বা ফ্রিজের মধ্যে রাখলে কোন ঔষধি গুনাগুন আর পাওয়া যায় না।
আমাদের শেষ কথা
আদার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলি সম্পূর্ণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আদার উপকারিতা গুলি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। এছাড়াও আপনি যদি আমাদের সাথে কথোপকথন করতে চান তাহলে Contact-Us পেজে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। এরকম আরও নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।
মোঃ হেদায়েতুল ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও বাণী - আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব…
প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১০৮ নাম - জগদ্বন্ধু সুন্দর ১৮৭১ সালের ২৮শে এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায়…
হ্যাপি হোলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস বা দোলযাত্রার শুভেচ্ছা বার্তা - বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।…
মার্ক টোয়েনের উক্তি ও বাণী - মার্ক টোয়েন ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক।…
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী - কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন বিংশ শতাব্দীর প্রধান…
সক্রেটিসের উক্তি ও বাণী সমুহ - সক্রেটিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। সক্রেটিসের তেমন কোন…