নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা – নিম পাতার উপকারিতা বিষয় নিয়ে যতই বলি না কেন ততোই যেন কম হয়ে যায়। নিম হল একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ এবং চিরহরিৎ বৃক্ষ। নিম এর ইংরেজি নাম হল NEEM, কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক সম্মত নাম বা উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম হল Azadirachat Indica । নিমগাছ এশিয়া মহাদেশের ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র স্থানেই পাওয়া যায়। নিম গাছ আমাদের একটি বিশেষ উপকারী বৃক্ষ বটে। নিম আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্ভিদ। নিম গাছের পাতা থেকে শুরু করে বাকল (ছাল), শিকড়, ফুল এবং ফল সব কিছুই পুষ্টিগুণে ভরপুর।
নিমের গাছের ফল পাখিদের খুবই জনপ্রিয় একটি খাদ্য। এছাড়াও নিমগাছ হিন্দুদের ক্ষেত্রে খুবই পবিত্র তম একটি উদ্ভিদ বলেও জানা যায়। কারণ নিম গাছ দিয়ে বহু দেব-দেবীর মূর্তি তৈরি করা হয়। নিম গাছকে অভূতপূর্ব একটি ঔষধি গাছ হিসেবে মান্য করা হয়। আর সেই জন্যই নিম গাছ কে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি উদ্ভিদ বা বৃক্ষ বলা হয়ে থাকে। নিম গাছের গুনাগুন এতটাই যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিম গাছকে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ ‘ বলে ঘোষণা করেছে।
একটি নিম গাছ ১০ বছর সময় নেয় প্রাপ্তবয়স্ক হতে। নিম গাছের ছালকে ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসার ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে নিম গাছের পাতা কুষ্ঠ রোগ, পেটে ব্যথা,ত্বকে আলসার,জ্বর, চোখের নানা ব্যাধি, ডায়াবেটিস, মাড়ি ফুলে যাওয়া, হৃদপিণ্ড ও ধমনীর নানা রোগ এবং যকৃতের সমস্যার মত রোগের ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়াও নিম পাতার রস কৃমিনাশক ঔষধ হিসাবে খুবই কার্যকরী। কারণ নিম গাছের পাতায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিম গাছের পাতাই উপস্তিত রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিগুন।
নিম পাতার পুষ্টিগুন ও উপাদান
প্রোটিন | ২.৪৮ গ্রাম |
ফাইবার | ৬.৭৭ গ্রাম |
আয়রন | ৫.৯৮ মিলি গ্রাম |
ক্যালোরি | ৪৫ মিলি গ্রাম |
ফ্যাট | ০.০০৩ গ্রাম |
ফসফরাস | ২৩ মিলি গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১৭৫.৫ মিলি গ্রাম |
সোডিয়াম | ২৫.২৭ মিলি গ্রাম |
পটাশিয়াম | ৮৮.৯ মিলি গ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ৪৪.৪৫ মিলি গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৮.১ গ্রাম |
নিম হল প্রচুর ঔষধী গুণে সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ। এমনকি বেদে -ও উল্লেখ আছে নিম ‘সর্বরোগ নিবারণ’ এর মহা ঔষধ। নিম হল এমন একটি উদ্ভিদ যা সমস্ত রোগ বা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে বা রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও বহুকাল ধরে শরীরের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য নিম ব্যবহার হয়ে আসছে।
নিম গাছ এবং নিম পাতা শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি উদ্ভিদ তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু আমরা হয়তো নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ে অনেক কিছুই জানি না। আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে কিছু তথ্য। তো চলুন এক নজরে দেখে নিন নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলি-
নিম পাতার উপকারিতা
ওজন কমাতে –
দেহের ওজন কমাতে নিমপাতা খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নিমের ফুল শরীরের চর্বি কমাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। দেহের ওজন কমাতে নিমপাতা এবং নিমের ফুল চূর্ণ (বেটে) করে, ১ চা চামচ মধুর সাথে, এক চা-চামচ লেবুর রস মিশ্রণ করে প্রতিনিয়ত খালি পেটে সেবন করতে পারেন। এটি খুব দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রক্ত পরিষ্কার করে –
দেহের রক্ত পরিষ্কার করতে নিম পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতার রস প্রতিনিয়ত সেবন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে আসে এবং রক্ত পরিষ্কার করে। এছাড়াও হৃদপিন্ডের গতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন। নিমপাতা শরীরের রক্তচলাচল ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিম-
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার ভূমিকা অপরিসীম। নিম পাতায় উপস্থিত উপাদান গুলি শরীরকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে, তা ছাড়াও রক্ত বিশুদ্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক ও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নিমপাতা খাওয়া উচিত। প্রতিনিয়ত নিম পাতা খেলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধির সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত খালি পেটে যদি এক কাপ জলের সাথে এক চা চামচ মধু এবং নিম পাতার রস মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।
খুশকি রোধে –
নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ছত্রাক নাশক এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান। এই উপাদান গুলি খুশকির চিকিৎসার জন্য মহাঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে যদি মাথার তালুর উপর ভাল করে লাগানো হয়, তাহলে খুশকি, উকুন এবং চুলকানির মত সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। এছাড়াও নিম পাতা গরম জলে ফুটিয়ে ওই জলটি মাথার চুলে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখার পর ভালভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যাবহার করলে চুল পড়ার মতো সমস্যার হাত থেকে নিরাময় পাবেন।
দাত ও মাড়ির সমস্যা সমাধানে –
দাঁত এবং মাড়ির যে কোন সমস্যার সমাধানে ঔষধ হিসেবে নিমকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রধানত স্টেপটোকক্কাস মিউট্যান্সের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধির ফলে মুখগহ্বরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে নিরাময় পেতে নিম খুবই উপকারী একটি উপাদান। এর পাশাপাশি নিমের তেল বিভিন্ন টুথপেস্ট এবং ফেসওয়াশে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারণ এতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে Anti-microbial Antibodies উপাদান। মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম একটি উপাদান হলো নিম। নিম পাতায় উপস্থিত এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান মারি এবং দাঁতের টিস্যু গুলির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম –
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে নিম খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে সুগার বা ডায়াবেটিস এর মত রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম খুবই উপকারী একটি উপাদান। একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, নিমে উপস্থিতি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান, যা শরীরের মধ্যে উপস্থিত যেকোনো রোগ ও জীবাণুকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে।
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে নিম –
হাঁপানি এবং অ্যাজমার মতো কষ্টদায়ক রোগ থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম নিম। নিমের বীজ থেকে তেল উৎপন্ন হয় এবং ওই তেল হাঁপানি চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত যদি নিয়ম করে কয়েক ফোটা নিমের তেল সেবন করা হয়। তাহলে অ্যাজমা অথবা হাঁপানির মতো কষ্টদায়ক রোগের থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। বহু বছর ধরে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় হাঁপানির ঔষধ হিসাবে নিমের তেল ব্যবহার হয়ে আসছে।
আলসার চিকিৎসায় নিমের উপকারিতা –
আলসার এর মত মারণ রোগের হাত থেকে নিরাময় দিতে নিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নিম পাতা ব্যবহারের ফলে আলসারের মত রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদি প্রতিনিয়ত সকাল বেলায় খালি পেটে নিম গাছের ছাল গুঁড়ো করে পরিমাণ মতো জলের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া খান, তাহলে আলসারের মত সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন। নিম পাতা ব্যবহারের ফলে গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাসের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে নিম –
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে নিম খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতায় উপস্থিত রয়েছে স্যাকারাইডস এবং লিওমনোয়েডস নামক উপাদান, যা মানব শরীরে ক্যান্সার উৎপন্নকারী কোষগুলিকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিনিয়ত নিমপাতা বা নিম পাতার নির্যাস সেবনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম পাতার নির্যাস প্রস্টেট ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ধ্বংস করতে সক্ষম। তাই প্রতিনিয়ত নিয়ম করে নিম পাতা বা নিম পাতার নির্যাস সেবন করা প্রয়োজন।
কুষ্ঠ রোগ থেকে মুক্তি দিতে –
আগেকার সময়ে যদি কোনো মানুষের কুষ্ঠ রোগ হত, তাহলে তাকে সমাজ থেকে বহিস্কৃত করে, নির্জন একটি স্থানে রেখে দেয়া হতো। তার কারণ, কুষ্ঠ রোগ হলো একটি স্পর্শ-জনিত রোগ। আর সেই কারণেই কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে কেউ যেতে চাইনা। যার ফলে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগীর সঠিক চিকিৎসা পর্যন্ত হতো না। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হত। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিম গাছের ফল দিয়ে তৈরি তেল কুষ্ঠ রোগের ঔষধ রূপে ব্যবহার করা হয়। তবে নিমের তেল অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে বিষাক্ত প্রভাব হতে পারে। যার কারণে নিমের তেল ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নেবেন।
ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে –
ম্যালেরিয়া রোগের এক অন্যতম ঔষধ হল নিম। এই রোগ প্রধানত স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা ছড়ায়। ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পরে। ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু বহনকারী ব্যাকটেরিয়া গুলিকে মেরে ফেলতে সক্ষম নিম। কারণ নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া উপাদান, যা ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেই সকল ঔষধে নিমের ব্যবহার করা হয়। নিম পাতা ম্যালেরিয়া রোগের এক প্রধান ঔষধ হিসেবেও জানা যায়।
লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় নিমের উপকারিতা-
নিম গাছের ফুল লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লিভারে জন্ডিস এর মত সমস্যা থেকে সমাধান দিতে নিম খুবই কার্যকরী। নিমের ফুল উপস্থিত রয়েছে কার্সিনোজেনেসিস উপাদান, যা লিভারের পক্ষে খুবই উপকারী একটি উপাদান। তবে যদি কোন বেক্তির লিভারের সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে নিম ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল –
নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা মানব শরীরের যেকোনো রোগের জীবাণুকে মেরে ফেলতে সক্ষম। প্রধানত নিম গাছের পাতায় এই অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বেশি পরিমাণে উপস্থিত রয়েছে। এছাড়াও নিম গাছের পাতায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান। এই উপাদান গুলি যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। নিম গাছের ডালে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান। এই অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান মানবদেহে উৎপন্ন হওয়া যেকোনো ধরনের জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিম পাতায় উপস্থিত রয়েছে স্ট্রেপ্টোকোকাস মিটানস নামক উপাদান, যা দাঁতের যেকোন রকমের সমস্যার মহাঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কৃমি নাশে নিম পাতার উপকারিতা –
কৃমি নাশ করতে নিম পাতার ভূমিকা অপরিসীম। যদি শিশুদের পেটে কৃমির জন্ম হয় এবং পেটে কৃমি বড় হয়, তাহলে ওই শিশুদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এই কৃমি নির্মূল করতে নিম গাছের মূলের ছাল যদি শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিনিয়ত নিয়ম করে গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিনবার খাওয়া খান, তাহলে খুব কৃমি নাশ করা সম্ভব।
ত্বকের যত্নে –
বহুকাল আগে থেকেই রূপচর্চাই নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে। কখনো কখনো শরীরের ভিতরে নানা রকম সমস্যার কারণে পিম্পলস, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস এবং ব্রণের মতো সমস্যা দেখা যায়। তবে ত্বকের যত্ন নিতে নিম পাতায় উপস্থিত রয়েছে বিশেষ ঔষধি গুনাগুন। নিম পাতায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, যা ত্বকে প্রয়োজন মতো আদ্রতা প্রদান করতে সাহায্য করে। ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া জনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকেই নিম পাতা দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করে থাকেন। তবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে নিম পাতা সিদ্ধ করে ওই জল ত্বকে লাগাতে পারেন।
নিম পাতার ব্যবহার
- ক্যান্সার, ডায়বেটিস, হজম সংক্রান্ত সমস্যা, এবং উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যার সমাধানে নিম পাতার ভূমিকা অপরিসীম।
- গ্যাস্টিকের মতো সমস্যা থেকে নিরাময় দিতে নিমপাতা সিদ্ধ খুবই উপকারী।
- প্রতিনিয়ত নিমপাতা সেবনের ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়। সেই কারণেই ভোজন তালিকায় প্রতিদিন নিমপাতা রাখা প্রয়োজন।
- নিমের ফল দিয়ে তৈরি তেল সেবন করলে হাঁপানির মতো সমস্যার হাত থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
- রক্তে অতিরিক্ত শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে নিম পাতা।
নিম পাতার অপকারিতা
প্রত্যেকটি জিনিসের যেমন ভালো দিক থাকে, তেমনই তার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও থাকে। সেই অনুযায়ী নিমের ভালো দিক এর পাশাপাশি বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে নিম পাতা খাওয়ার ফলে কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে,তা নিন্মে তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। তো চলুন এক নজরে দেখে নিন নিম পাতার অপকারিতা গুলি –
- কিছু কিছু সময় নিম বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। যার কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে নিমপাতা সেবন করা উচিত নয়।
- যে কোন প্রকার অপারেশনের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকে নিম পাতা খাওয়া এবং নিম ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
- গর্ভবতী অবস্থায় মহিলাদের নিম পাতা খাওয়া কোনমতেই উচিত নয়। কারণ গর্ভবতী অবস্থায় নিম পাতা খেলে গর্ভপাত হওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
- যে সকল মানুষের নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেসার সেই সকল ব্যক্তিদের জন্য নিম পাতা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। কারণ নিম পাতা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে নিম পাতা সেবনের ফলে উপকারের বদল অপকার হতে পারে। সেই কারণে নিয়ম করে পরিমাণ মতো নিম পাতা খাওয়া উচিত।
আমাদের শেষ কথা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং নিমপাতার ব্যাবহার সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই নিবন্ধটি আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।