পুষ্টিগুণ

কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা – প্রাচীন কাল থেকেই কালোজিরার ব্যবহার হয়ে আসছে একাধিক ক্ষেত্রে। তবে আমারা সাধারনত রান্নার মশলা হিসেবে কালোজিরার ব্যবহার করে থাকি। কালোজিরা মাঝারি আকৃতির একটি মৌসুমী গাছ। কালোজিরার, একবার ফল হয় এবং একবার ফুল হয়। এর ফুল আবার দুই ধরনের হয়, স্ত্রী ও পুরুষ ফুল। পাঁচটি পাপড়ি বিশিষ্ট নীলচে সাদা রঙের হয়ে থাকে এই ফুল এবং এর বীজ তিন কোনা আকৃতির কালো রঙের হয়ে থাকে। কালোজিরার বিজ্ঞানসম্মত নাম হল – Nigella Sativa Linn । রান্নার মশলা হিসেবে খুবই জনপ্রিয় কালোজিরা। তবে পাঁচ ফোঁড়ন মশলার একটি অন্যতম উপাদান বটে এই কালোজিরা। রান্নার মশলার পাশাপাশি কালোজিরার বিশেষ ঔষুধী গুণাগুণ রয়েছে। যার কারণে বহুকাল ধরে বিভিন্ন চিকিৎসায় কালোজিরা ব্যবহার হয়ে আসছে।

সূচিপত্র

Toggle

কালোজিরার পুষ্টি উপাদান

কালোজিরা নানা ধরনের রোগব্যাধি থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম। কারণ এতে উপস্থিত রয়েছে প্রায় শতাধিক পুষ্টি ও উপকারী উপাদান। কালোজিরা থেকে যে তেল পাওয়া যায় তা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বর্তমানে কালোজিরার তৈরি ক্যাপসুলও বাজারে পাওয়া যায়। কালোজিরাতে ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা, ৩৫ শতাংশ স্নেহ বা ভেষজ তেল ও চর্বি উপস্থিত রয়েছে। এছাড়া উপস্থিত রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। প্রতি গ্রাম কালোজিরায় প্রোটিন উপস্থিত রয়েছে ২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম, কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম, জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম এবং ফোলাসিন ৬১০ আইউ।

আমিষ ২১ শতাংশ
শর্করা ৩৮ শতাংশ
ভেষজ তেল ও চর্বি ৩৫ শতাংশ
প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম
ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম
আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম
ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম
কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম
জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম
নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন বি১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম
ফোলাসিন ৬১০ আইউ

 

কালোজিরার তেলে উপস্থিত রয়েছে, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, ভিটামিন-সি, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফেট, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, আয়রন, জিংক, লৌহ, কার্বোহাইড্রেট, অলিক এসিড, লিনোলিক এসিড এছাড়াও জীবানুনাশক একাধিক উপাদান যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

কালোজিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়। কালোজিরা দিয়ে তৈরি এই তেল বিভিন্ন ঔষধালয়ে ব্যবহার হয়ে থাকে। আমাদের এই মানব জীবনের জন্য কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। প্রায় শতাধিক পুষ্টি গুণ রয়েছে কালোজিরার মধ্যে। কালোজিরা আয়ুর্বেদিক, কবিরাজি এবং ইউনানী চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। কালোজিরায় উপস্থিতি রয়েছে ক্যারোটিন যা মানবদেহে ক্যান্সার এর মত মারণ রোগের হাত থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম।

কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

বলতে গেলে কালোজিরা একাধিক পুষ্টি ও ওষধিগুনে ভরপুর। আমরা সকলেই প্রায় কালোজিরা খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা হয়তো কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানিনা। আজ আমরা আপনাদের সামনে  কালোজিরা উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরেছি। আসুন এক নজরে দেখে নিন কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলি –

কালো জিরার উপকারিতা


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে –

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে কালোজিরা। কালোজিরাতে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে, যা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ রাখতে সক্ষম। তাই নয়ম করে প্রতিনিয়ত কালোজিরা খাওয়া প্রয়োজন।

সর্দি কাশি থেকে নিরাময় –

সর্দি কাশির মতো সমস্যা থেকে খুব দ্রুত নিরাময় দিতে সক্ষম কালোজিরা। যে সকল বেক্তিরা সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিনিয়ত এক চা চামচ কালোজিরার তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে ৩ বার সেবন করুন। খুব সহজেই সর্দি কাশি থেকে নিরাময় পাবেন। এছাড়াও এক চামচ কালোজিরার তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু এবং তুলসী পাতার রস মিশিয়ে সেবন করলে খুব দ্রুত সর্দি কাশি ও জ্বর থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।

মাথাব্যথা দূর করে –

মাথা ব্যথার ঔষধ হিসেবে কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। মাথা ব্যথা থাকে নিরাময় পেতে কালোজিরার তেল মাথায় লাগিয়ে রাখুন। এটি ব্যাবহারের কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন আপনার মাথাব্যথা অদৃশ্য হয়ে গেছে। কালোজিরার তেল মাথা ব্যথা থেকে খুব দ্রুত নিরাময় দিতে সক্ষম।

চুল পড়া রোধে –

চুল পড়ার মত সমস্যার হাত থেকে মুক্তি দিতে কালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম। কালোজিরা চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগাতে এবং চুলের গোঁড়া মজবুত করতে সক্ষম। কালিজিরার তেল প্রতিনিয়ত চুলে ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ হয়। তাই চুলের যত্ন নিতে ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা থেকে নিয়াময় পেতে প্রতিনিয়ত কালোজিরার তেল ব্যাবহার করতে পারেন।

দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি –

দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে কালোজিরা। উষ্ণ গরম জলে কালোজিরা ভিজিয়ে রাখার পর ওই জল দিয়ে গার্গল বা কুলিকুচি করলে দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কালোজিরার জল মুখের ভেতরে থাকা জীবাণু খুব সহজেই মেরে ফেলতে সক্ষম। যার কারণে দাঁতের ব্যথা ও মাড়ির যেকোনো সমস্যা থেকে সমাধান দিতে সাহায্য করে কালোজিরা।

অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা সমাধানে –

অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা থেকে সমাধান পেতে প্রতিনিয়ত কালোজিরা সেবন করুন। এক কাপ দুধের সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার সেবন করলে গ্যাসের সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন। এটি এক থেকে দুই সপ্তাহ সেবন করলে এর উপকার বুঝতে পারবেন।

পেটের সমস্যা সমাধানে –

নিয়মিত পেটের সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে সেবন করুন কালোজিরা। যারা নিয়মিত পেটের সমস্যায় ভুগছেন সেই সকল ব্যক্তিরা কালোজিরা ভাজা করে গুড়ো করে নিন। এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরার গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতিদিন সকাল ও বিকেল বেলায় সেবন করুন। এক সপ্তাহ সেবন করলেই এর উপকার আপনি বুঝতে পারবেন।

ডায়েটে কালোজিরা –

ডায়েটের জন্য কালোজিরার ভূমিকা অপরিসীম। যারা ডায়েট করছেন তারা প্রতিনিয়ত রান্নার তরকারিতে বা রুটি বানানোর সময় কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও মধু ও জলের সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে পান করতে পারেন। টক দইয়ের সঙ্গে কালোজিরা সেবন করলে সবথেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

ওজন কমাতে –

শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সক্ষম কালোজিরা। কালোজিরাতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ওজন কমাতে কালিজিরার তেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে –

দৃষ্টি শক্তি বাড়িয়ে তুলতে কালোজিরা একটি অন্যতম জনপ্রিয় উপাদান। কালোজিরাতে উপস্থিত রয়েছে বিশেষ ঔষধি গুনাগুণ, যা চোখের লাল ভাব কাটাতে সাহায্য করে এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে –

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কালোজিরার ভুমিকা অতুলনীয়। কালোজিরাতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান গুলি মানবদেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। গরম চা অথবা জলের সঙ্গে কালোজিরা যদি প্রতিনিয়ত সেবন করা হয়, তাহলে উচ্চ রক্তচাপের হাত থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ  –

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কালোজিরা খুবই উপকারী। বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগ একটি বিপদজনক মারণদায়ী রোগে পরিণত হয়েছে। ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হলে জীবন নাশের ঝুকি বেশি থাকে। তবে এই ডায়াবেটিস রোগ থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম কালোজিরা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিনিয়ত সকাল বেলায় এক কাপ চায়ের সঙ্গে কালোজিরার তেল মিশ্রণ করে খেতে পারেন।

জন্ডিস বা লিভারের সমস্যা সমাধান –

লিভারের বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কালোজিরা। কালোজিরাতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাসায়নিক পদার্থের বিষাক্ততা কমাতে সক্ষম। যার ফলে লিভার সুস্থ থাকে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে প্রতিনিয়ত নিয়ম করে কালোজিরা খাওয়া প্রয়োজন।

জয়েন্ট বা হাড়ের ব্যথার জন্য

বয়স বাড়ার সাথে সাথে বেশির ভাগ মানুষের শরীরেই আর্থ্রারাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথা বা হাড়ের ব্যাথার মতো সমস্যা গুলি লক্ষ করা যায়। তবে আর্থ্রারাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথা বা হাড়ের ব্যাথা থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম কালোজিরা। শরীরের ব্যথা স্থানে যদি নিয়ম করে প্রতিদিন কালোজিরার তেল ব্যবহার করা হয়, তাহলে জয়েন্টের ব্যথার হাত থেকে খুব দ্রুত নিরাময় পাওয়া সম্ভব।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে-

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কালোজিরার ভূমিকা অপরিসীম। মুখের কালো দাগ এবং ব্রণ সারাতে সক্ষম কালোজিরা। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কালোজিরার তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন এবং এটি দিনে দুইবার মুখে লাগান। নিয়মিত এটি ব্যবহার করতে থাকলে মুখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে সমাধান পাবেন এবং বাড়বে ত্বকের উজ্জ্বলতা।

কিডনির সমস্যা দূর করে –

কালোজিরা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ গুলি দূরে রাখতে সক্ষম কালোজিরা। উষ্ণ জলের সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরা গুঁড়ো এবং একটু মধু মিশ্রণ করে যদি প্রতিনিয়ত সেবন করা যায়। তাহলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। কিডনিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম কালোজিরা।

হাঁপানি থেকে মুক্তি দেয়

হাঁপানি থেকে মুক্তি দিতে কালোজিরা খুবই উপকারী একটি উপাদান। বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশি লক্ষ করা যায়। তবে এই শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম কালোজিরা। হালকা গরম জলের সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরার গুঁড়ো মিশিয়ে যদি প্রতিনিয়ত সেবন করা হয়, তাহলে শ্বাসকষ্টের মতো বড় কঠিন রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য –

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে কালোজিরার তেল ও কালোজিরার ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ কালোজিরাতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড, দস্তা এবং আয়রন এর মত উপাদান। যা মানবদেহের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও চিন্তা শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখে-
মানবদেহে কোলেস্ট্রল এর উপস্থিতি খুবই প্রয়োজন। কিন্তু শরীরে যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায়, তবে তা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কালোজিরা রক্তে উপস্থিত অতিরিক্ত পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দিতে সক্ষম এবং ভালো কোলেস্টেরল উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন।

পিরিয়ডের সমস্যা সমাধানে –

পিরিয়ড মহিলাদের জন্য খুবই ভালো, কারণ এটির জন্য তারা সন্তান প্রসব করতে পারে। তবে অনেক মহিলারাই রয়েছেন যারা অনিয়মত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগছেন। অনিয়মত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কাঁচা হলুদের রস -এর সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে ৩ বার সেবন করুন। এই মিশ্রণটি কয়েকদিন সেবন করলে অনিয়মত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধিতে –

মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে কালোজিরা একটি মহা মূল্যবান উপাদান। প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে কালো জিরা গুঁড়ো করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে স্তনদানকারী মহিলারা সেবন করতে পারেন। এছাড়াও কালোজিরার তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে সেবন করলে উপকার বেশি পাওয়া যায়।

শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি –

শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য প্রতিনিয়ত নিয়ম করে কালোজিরা খাওয়াতে পারেন অথবা কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন। শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা খুবই উপকারী একটি উপাদান। প্রতিনিয়ত নিয়ম করে শিশুদের কালোজিরা খাওয়ালে শিশুর মস্তিষ্ক সুস্থ-সবল থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

চর্মরোগ থেকে নিরাময় পেতে –

কালোজিরার তেল চর্মরোগ থেকে নিরাময় দিতে সক্ষম। যে স্থানে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে সেই স্থানে কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন। এছাড়াও হলুদের রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো কালোজিরার তেল এবং মধু মিশিয়ে প্রতিদিন দিনে ৩ বার সেবন করলে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে উপকার পাবেন।

কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

আজ আমরা আপনাদের সামনে কালোজিরার একাধিক উপকারিতা তুলে ধরেছি কিন্তু কালোজিরা খাওয়ারও একাধিক উপায় রয়েছে। আমরা সকলেই হয়তো কমবেশি কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম জানি। আবার অনেকেই হয়তো জানি না। আসুন এক নজরে দেখে নিন কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম –

  • কালোজিরা তরকারির মশলা হিসেবে খেতে পারেন।
  • কালোজিরার তেল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • কাচা কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়া যায়।
  • রুটি বানানোর সময় কাঁচা রুটির ওপর কালোজিরা ছড়িয়ে দিতে পারেন।
  • চাটনি রান্না করার সময় কালোজিরা ব্যবহার করতে পারেন।
  • বিস্কুট, কেক, মিষ্টির মতো একাধিক খাবারে কালোজিরা ব্যবহার করা যায়।

কালোজিরার অপকারিতা

কালোজিরার যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি কালোজিরার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার ফলে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা সেবন করলে কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, নিম্নে তার বর্ণনা দেয়া হলো। আসুন একনজরে দেখে নিন কালোজিরা অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক গুলি –

  • কালোজিরার তেল অতিরিক্ত পরিমাণে ত্বকে বা স্কিনে লাগালে এলার্জি হতে পারে। সেই জন্য পরিমাণমতো কালোজিরার তেল ব্যবহার করা উচিত।
  • কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করলে শরীরের রক্ত জমাট বাঁধা কমে যেতে পারে। যার ফলে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থেকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা না খাওয়ায় ভালো।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরার খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে। যদি কারো শরীরে ডায়াবেটিস -এর সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই শরীরের শর্করার চেকআপ করুন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার পর কালোজিরা খেতে পারেন।

 আমাদের শেষ কথা 

কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কালোজিরার খাওয়ার নিয়ম সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই নিবন্ধটি আপনার পড়ে ভালো লেগে থাকলে আপনার আপনাদের প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।

Avinas Mondal

Hello, My name is Avinas Mandal. I am currently a Content Writer for Banglaprotibedon.com. I have been writing for 2 years.

Recent Posts

জনপ্রিয় কবি মোঃ হেদায়েতুল ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও বাণী সমূহ

মোঃ হেদায়েতুল ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও বাণী - আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব…

1 year ago

প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১০৮ নাম | Lord Jagadbandhu 108 Name

প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১০৮ নাম - জগদ্বন্ধু সুন্দর ১৮৭১ সালের ২৮শে এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায়…

2 years ago

হ্যাপি হোলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস | দোলযাত্রার শুভেচ্ছা বার্তা | Happy Holi Wishes

হ্যাপি হোলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস বা দোলযাত্রার শুভেচ্ছা বার্তা - বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।…

2 years ago

মার্ক টোয়েনের উক্তি ও বাণী সমূহ | Mark Twain Quotes in Bengali

মার্ক টোয়েনের উক্তি ও বাণী - মার্ক টোয়েন ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক।…

2 years ago

কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী সমূহ | Kazi Nazrul Islam Quotes

কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী - কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন বিংশ শতাব্দীর প্রধান…

2 years ago

সক্রেটিসের উক্তি ও বাণী সমুহ | Socrates Quotes in Bengali

সক্রেটিসের উক্তি ও বাণী সমুহ -  সক্রেটিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। সক্রেটিসের তেমন কোন…

2 years ago