দায়মোচন কবিতা -টির রচয়িতা হলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন বাঙালি কবি, উপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোট গল্পকার, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তিনি তার জীবনে একাধিক ছোট গল্প ও কবিতা লিখে গিয়েছেন। তার লেখা জনপ্রিয় কবিতা গুলির মধ্যে একটি অন্যতম কবিতা হল দায়মোচন কবিতা। দায়মোচন কবিতা টি “সঞ্চয়িতা” কাব্যগ্রন্থের অন্তরগত। এই কবিতা টি প্রকাশিত হয় ২৩ অগস্ট, ১৯২৮ সালে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনে ৫২ টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮ টি নাটক, ১৩ টি উপন্যাস এবং ৯৫ টি ছোট গল্প লিখে গিয়েছেন।
দায়মোচন
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
চিরকাল রবে মোর প্রেমের কাঙাল,
এ কথা বলিতে চাও বোলো।
এই ক্ষণটুকু হোক সেই চিরকাল –
তার পরে যদি তুমি ভোল
মনে করাব না আমি শপথ তোমার,
আসা যাওয়া দু দিকেই খোলা রবে দ্বার –
যাবার সময় হলে যেয়ো সহজেই,
আবার আসিতে হয় এসো।
সংশয় যদি রয় তাহে ক্ষতি নেই,
তবু ভালোবাস যদি বেসো।।
বন্ধু, তোমার পথ সম্মুখে জানি,
পশ্চাতে আমি আছি বাঁধা।
অশ্রুনয়নে বৃথা শিরে কর হানি
যাত্রায় নাহি দিব বাধা।
আমি তব জীবনের লক্ষ্য তো নহি,
ভুলিতে ভুলিতে যাবে হে চিরবিরহী,
তোমার যা দান তাহা রহিবে নবীন
আমার স্মৃতির আঁখিজলে –
আমার যা দান সেও জেনো চিরদিন
রবে তব বিস্মৃতিতলে।।
দূরে চলে যেতে যেতে দ্বিধা করি মনে
যদি কভু চেয়ে দেখ ফিরে,
হয়তো দেখিবে আমি শূন্য শয়নে –
নয়ন সিক্ত আঁখিনীরে।
মার্জনা কর যদি পাব তবে বল,
করুণা করিলে নাহি ঘোচে আঁখিজল –
সত্য যা দিয়েছিলে থাক্ মোর তাই,
দিবে লাজ তার বেশি দিলে।
দুঃখ বাঁচাতে যদি কোনোমতে চাই
দুঃখের মূল্য না মিলে।।
দুর্বল ম্লান করে নিজ অধিকার
বরমাল্যের অপমানে।
যে পারে সহজে নিতে যোগ্য সে তার,
চেয়ে নিতে সে কভু না জানে।
প্রেমেরে বাড়াতে গিয়ে মিশাব না ফাঁকি,
সীমারে মানিয়া তার মর্যাদা রাখি –
যা পেয়েছি সেই মোর অক্ষয় ধন,
যা পাই নি বড়ো সেই নয়।
চিত্ত ভরিয়া রবে ক্ষণিক মিলন
চিরবিচ্ছেদ করি জয়।।
আমাদের শেষ কথা
দায়মোচন কবিতা টি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই নিবন্ধটি আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।