জীবনানন্দ দাশের উক্তি – জীবনানন্দ দাশ ছিলেন একজন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তার লেখা কবিতায় পরাবাস্তব এর দেখা মেলে। জীবনানন্দ দাশের লেখা প্রথম কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের প্রভাব কিছুটা থাকলেও তার লেখা দ্বিতীয় কাব্যে তিনি নিজেই হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। তার লেখা কাব্য গুলি চিত্ররূপময়। যার ফলে বুদ্ধদেব বসু তাঁকে ‘নির্জনতম কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্নদাশঙ্কর রায় তাঁকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলে জীবনানন্দ দাশকে মনে করেছেন সমালোচক গণ।
১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি এর অন্তর্গত বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন জীবনানন্দ দাশ। প্রধানত জীবনানন্দ দাশ একজন কবি হলেও, তিনি তার জীবনে বেশ কিছু প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করেছেন এবং প্রকাশ করেছেন। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের, কলকাতাতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ২১ টি উপন্যাস এবং ১২৬ টি ছোটগল্প রচনা করেছিলেন, কিন্তু তার জীবনদশায় একটিও উপন্যাস বা ছোটগল্প প্রকাশিত হয়নি।
বিংশ শতাব্দীর এক অন্যতম কবি জীবনানন্দ দাশ। তিনি তার জীবনে একাধিক মূল্যবান কিছু উক্তি আমাদেরকে উপহার দিয়ে গিয়েছেন। তার মধ্য থেকে মূল্যবান কয়েকটি জীবনানন্দ দাশের উক্তি আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আসুন এক নজরে দেখে নিন জীবনানন্দ দাশের উক্তি গুলি –
১
“ বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।”
২
“ আমরা বুঝেছি যারা বহু দিন মাস ঋতু শেষ হলে পর
পৃথিবীর সেই কন্যা কাছে এসে অন্ধকারে নদীদের কথা
কয়ে গেছে আমরা বুঝেছি যারা পথ ঘাট মাঠের ভিতর
আরো এক আলো আছে: দেহে তার বিকাল বেলার ধুসরতা,
চোখের দেখার হাত ছেড়ে দিয়ে সেই আলো হয়ে আছে স্থির;
পৃথিবীর কঙ্কাবতী ভেসে গিয়ে সেইখানে পায় ম্লান ধূপের শরীর।”
৩
“যে জীবন ফড়িংয়ের, দোয়েলের, মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা”
৪
“ জানো কি অনেক যুগ চলে গেছে?
মরে গেছে অনেক নৃপতি?
অনেক সোনার ধান ঝরে গেছে জানো না কি? ”
৫
“আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো, এই নবীন শতাব্দীতে নক্ষত্রের নিচে।”
৬
“এর নাম ধানসিঁড়ি বুঝি?’
মাছরাঙাদের বললাম;
গভীর মেয়েটি এসে দিয়েছিলো নাম।
আজও আমি মেয়েটিকে খুঁজি;
জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে
কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে।”
৭
“তবুও নদীর মানে স্নিগ্ধ শুশ্রূষার জল, সূর্য মানে আলো।
এখনো নারী মানে তুমি, কত রাধিকা ফুরালো।”
৮
“শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা,
মাঠের উপরে বলিলাম
একদিন এমন সময় আবার আসিয়ো তুমি,
আসিবার ইচ্ছা যদি হয়!
পঁচিশ বছর পরে!”
৯
“আরম্ভ হয় না কিছু, তবু সব কিছুর শেষ হয়,
কীট যে ব্যর্থতা জানে পৃথিবীর ধুলো মাটি ঘাসে
তারও বড় ব্যর্থতার সাথে রোজ হয় পরিচয়!
যা হয়েছে শেষ হয়, শেষ হয় কোনোদিন যা হবার নয়!”
১০
“আজও আমি মেয়েটিকে খুঁজি, জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে।”
১১
“জীবন গিয়েছে চলে আমাদের বছর কুড়ি পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!”
১২
“তুমি তা জানো না কিছু, না জানিলে
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে!
যখন ঝরিয়া যাব হেমন্তের ঝড়ে,
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের পরে শুয়ে রবে?”
১৩
“চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা।”
১৪
“সুরঞ্জনা, তোমার হৃদয় আজ ঘাস,
বাতাসের ওপারে বাতাস
আকাশের ওপারে আকাশ।”
১৫
“মনে হয় শুধু আমি, আর শুধু তুমি
আর ঐ আকাশের পউষ নীরবতা
রাত্রির নির্জন যাত্রী তারকার কানে কানে কত কাল
কহিয়াছি আধো আধো কথা!”
১৬
“থমথমে রাত, আমার পাশে বসল অতিথি,
বললে, আমি অতীত ক্ষুধা,তোমার অতীত স্মৃতি!”
১৭
“আমরা যাই নি মরে আজও তবু কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়,
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোছনার প্রান্তরে,
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন এখনও ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাবার ডাইনামোর পরে।”
১৮
“জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক, আমি প্রয়োজন বোধ করি না,
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।”
১৯
“তুমি একা! তোমারে কে ভালোবাসে! তোমারে কি কেউ
বুকে করে রাখে!
জলের আবেগে তুমি চলে যাও
জলের উচ্ছ্বাসে পিছে ধু ধু জল তোমারে যে ডাকে!”
২০
“ভগবান, ভগবান, তুমি যুগ যুগ থেকে ধরেছ শুঁড়ির পেশা”
২১
“মেঘ শুধু মেঘ, হৃদয় শুধু হৃদয়, আর মরুভূমি শুধু মরুভূমি।”
২২
“কতো দেহ এলো গেল, হাত ছুঁয়ে-ছুঁয়ে
দিয়াছি ফিরায়ে সব,- সমুদ্রের জলে দেহ ধুয়ে
নক্ষত্রের তলে
বসে আছি,- সমুদ্রের জলে
দেহ ধুয়ে নিয়া
তুমি কি আসিবে কাছে”
২৩
“চোখে তার যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার!”
২৪
“একবার যখন দেহ থেকে বার হয়ে যাব
আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে?
আবার যেন ফিরে আসি
কোনো এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোন এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।”
২৫
“সারাটি রাত্রি তারাটির সাথে, তারার সাথেই হয় কথা,
আমাদের মুখ সারাটি রাত্রি মাটির বুকের পরে!”
২৬
“স্থবিরতা, কবে তুমি আসিবে বলো তো।”
২৭
“পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন, মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে।”
২৮
“ জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক; আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে ”
২৯
“যদি থাকে বন্ধুর মন,
গাং পাড় হইতে কতক্ষন।”
৩০
“তোমার পাখনায় আমার পালক, আমার পাখনায় তোমার রক্তের স্পন্দন”
৩১
“আমরা যাইনি মরে আজও তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়:
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে।”
৩২
“ আমরা বেসেছি যারা অন্ধকারে দীর্ঘ শীতরাত্রিটিরে ভালো,
খড়ের চালের পরে শুনিয়াছি মুগ্ধ রাতে ডানার সঞ্চার;
পুরোনা পেঁচার ঘ্রাণ অন্ধকারে আবার সে কোথায় হারালো!
বুঝেছি শীতের রাত অপরূপ মাঠে মাঠে ডানা ভাসাবার
গভীর আহ্লাদে ভরা, অশত্থের ডালে ডালে ডাকিয়াছে বক;
আমরা বুঝেছি যারা জীবনের এই সব নিভৃত কুহক ”
৩৩
“আমার হৃদয় পৃথিবী ছিঁড়ে উড়ে গেলো,
নীল হাওয়ার সমুদ্রে স্ফীত মাতাল বেলুনের মতো গেল উড়ে,
একটা দূর নক্ষত্রের মাস্তুলকে তারায়-তারায় উড়িয়ে দিয়ে চলল
একটা দুরন্ত শকুনের মতো।”
৩৪
“ মনে পড়ে কবেকার পাড়াগাঁর অরুণিমা স্যানালের মুখ;
উড়ুক উড়ুক তারা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়ুক
কল্পনার হাঁস সব, পৃথিবীর সব ধ্বনি সব রং মুছে গেল পর
উড়ুক উড়ুক তারা হৃদয়ের শব্দহীন জোছনার ভিতর।”
৩৫
“তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয়।”
৩৬
“শরীর রয়েছে, তবু মরে গেছে আমাদের মন! হেমন্ত আসেনি মাঠে, হলুদ পাতায় ভরে হৃদয়ের বন!”
৩৭
“সব ছেড়ে দিয়ে আমি তোমারে একাকী ভালোবেসে তোমার ছায়ার মতো ফিরিয়াছি তোমার পিছনে!”
৩৮
“ কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁলছায়ায়;
হয়তো বা হাঁস হব কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়,
সারা দিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধ ভরা জলে ভেসে ভেসে;
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে।”
৩৯
“আমাকে সে নিয়েছিলো ডেকে;
বলেছিলো, এ নদীর জল
তোমার চোখের মত ম্লান বেতফল,
সব ক্লান্তি রক্তের থেকে
স্নিগ্ধ রাখছে পটভূমি,
এই নদী তুমি।”
৪০
“আজকে রাতে তোমায়, আমার কাছে পেলে কথা বলা যেত। চারিদিকে হিজল শিরীষ নক্ষত্র ঘাস হাওয়ার প্রান্তর।”
৪১
“যে-পৃথিবী জেগে আছে, তার ঘাস – আকাশ তোমার।
জীবনের স্বাদ লয়ে জেগে আছো, তবুও মৃত্যুর ব্যথা দিতে পারো তুমি।”
৪২
“হেমন্তের ঝড়ে আমি ঝরিব যখন
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার।
তোমার আকাশ আলো জীবনের ধার
ক্ষয়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই, শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে।
আমি চলে যাবো—তবু জীবন অগাধ”
৪৩
“অর্থ নয়, র্কীতি নয়, সচ্ছলতা নয়। আরো এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে ,আমাদের ক্লান্ত করে।”
৪৪
“ আমরা দেখেছি বুনো হাঁস শিকারীর গুলির আঘাত
এড়ায়ে উড়িয়া যায় দিগন্তের নম্র নীল জোছনার ভিতরে,
আমরা রেখেছি ভালোবেসে ধানের গুচ্ছের পরে হাত,
সন্ধ্যার কাকের মতো আকাঙক্ষায় আমরা ফিরেছি ঘরে;
শিশুর মুখের গন্ধ, ঘাস, রোদ, মাছরাঙা, নক্ষত্র, আকাশ
আমরা পেয়েছি ঘুরে — ফিরে ইহাদের চিহ্ন বারোমাস ”
৪৫
“ দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হয়েছে হলুদ
হিজলের জানালায় আলো আর বুলবুলি করিয়াছে খেলা,
ইঁদুর শীতের রাতে রেশমের মতো রোমে মাখিয়াছে খুদ,
চালের ধূসর গন্ধে তরঙ্গেরা রূপ হয়ে ঝরেছে দু বেলা
নির্জন মাছের চোখে পুকুরের পাড়ে হাঁস সন্ধ্যার আঁধারে
পেয়েছে ঘুমের ঘ্রাণ, মেয়েলি হাতের স্পর্শ লয়ে গেছে তারে ”
৪৬
“অপরাজিতার মতো নীল, আরও নীল, আরও নীল হয়ে আমি যে দেখিতে চাই সেই আকাশ।”
৪৭
“আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে –
সে কেন জলের মত ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়?”
৪৮
“কুড়ি বছর পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!”
৪৯
“তোমার শরীর,
তাই নিয়ে এসেছিলে একবার তারপর, মানুষের ভিড়
রাত্রি আর দিন
তোমারে নিয়েছে ডেকে কোন দিকে জানিনি তা, হয়েছে মলিন
চক্ষু এই, ছিঁড়ে গেছি, ফেড়ে গেছি, পৃথিবীর পথ হেঁটে হেঁটে
কত দিন রাত্রি গেছে কেটে !”
৫০
“কাল রাতে ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হল তার সাধ ।”
৫১
“ঘনিষ্ঠ আকাশ যেন, যেন কোন বির্কীন জীবন
অধিকার করে আছে ইহাদের মন।
চাঁদ ডুবে গেলে পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বথের কাছে
একগাছা দড়ি হাতে গিয়েছিলে তবু একা একা,
যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের, মানুষের সাথে তার হয়নাকো দেখা
এই জেনে।”
৫২
“আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না,
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে অপেক্ষা করবার অবসর আছে।”
৫৩
“শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে, বলিলাম একদিন এমন সময় আবার আসিয়ো তুমি, আসিবার ইচ্ছা যদি হয়- পঁচিশ বছর পরে।”
৫৪
“হে পৃথিবী,
হে বিপাশামদির নাগপাশ, তুমি
পাশ ফিরে শোও,
কোনোদিন কিছু খুঁজে পাবে না আর”।
৫৫
“ ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল,-
ডালিম ফুলের মতো ঠোঁট যার রাঙা,
আপেলের মতো লাল যার গাল,
চুল যার শাঙনের মেঘ,
আর আঁখি গোধূলির মতো গোলাপী রঙিন,
আমি দেখিয়াছি তারে ঘুমপথে, স্বপ্নে কত দিন! ”
৫৬
“এত কি কথা তাহার সাথে?”
৫৭
“সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর, তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে, বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।”
৫৮
“আরম্ভ হয় না কিছু, সমস্তের তবু শেষ হয়।
কীট যে ব্যর্থতা জানে পৃথিবীর ধুলো মাটি ঘাসে
তারও বড় ব্যর্থতার সাথে রোজ হয় পরিচয়!
যা হয়েছে শেষ হয়, শেষ হয় কোনোদিন যা হবার নয়! ”
৫৯
“যে নদী হারায়ে যায় অন্ধকার রাতে নিরুদ্দেশে, তাহার চঞ্চল জল স্তব্ধ হয়ে কাঁপায় হৃদয়!”
৬০
“নক্ষত্রেরা চুরি করে নিয়ে গেছে, ফিরিয়ে দেবে না তাকে আর।”
১
“প্রেম ধীরে ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়, হয় নাকি?”
২
“অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা,
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই, প্রীতি নেই, নেই করুণার আলোড়ন
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।”
৩
“ পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে,
পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে,
পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দু জনের মনে,
আকাশ ছড়ায়ে আছে শান্তি হয়ে আকাশে আকাশে ”
৪
“হেঁয়ালি রেখো না কিছু মনে,
হৃদয় রয়েছে বলে চাতকের মতন আবেগ
হৃদয়ের সত্য উজ্জ্বল কথা নয়,
যদিও জেগেছে তাতে জলভারানত কোনো মেঘ,
হে প্রেমিক, আত্মরতিমদির কি তুমি?”
৫
“তবু তোমাকে ভালোবেসে মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে বুঝেছি, অকূলে জেগে রয় ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয়।”
৬
“একদিন একরাত করেছি প্রেমের সাথে খেলা!
একরাত একদিন করেছি মৃত্যুরে অবহেলা।
একদিন একরাত তারপর প্রেম গেছে চলে,
সবাই চলিয়া যায়, সকলের যেতে হয় বলে”
৭
“সকল কঠিন সমুদ্রে প্রবাল লুটে তোমার চোখের বিষাদ ভৎসনা, প্রেম নিভিয়ে দিলাম, প্রিয়।”
৮
“জ্ঞান হোক প্রেম
প্রেম শোকাবহ জ্ঞান
হৃদয়ে ধারণ করে সমাজের প্রাণ
অধিক উজ্জ্বল অর্থে
করে নিক অশোক আলোক।”
আমাদের শেষ কথা
জীবনানন্দ দাশের উক্তি ও বিখ্যাত বাণী গুলি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই নিবন্ধটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম সুন্দর সুন্দর আরও পোস্ট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ fb.com/banglaprotibedon ফলো করুন।
মোঃ হেদায়েতুল ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও বাণী - আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব…
প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১০৮ নাম - জগদ্বন্ধু সুন্দর ১৮৭১ সালের ২৮শে এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায়…
হ্যাপি হোলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস বা দোলযাত্রার শুভেচ্ছা বার্তা - বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।…
মার্ক টোয়েনের উক্তি ও বাণী - মার্ক টোয়েন ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক।…
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী - কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন বিংশ শতাব্দীর প্রধান…
সক্রেটিসের উক্তি ও বাণী সমুহ - সক্রেটিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। সক্রেটিসের তেমন কোন…