লতা মঙ্গেশকরের জীবনী (Lata Mangeshkar Biography) : লতা মঙ্গেশকর হলেন ভারতের একজন স্বনামধন্য গায়িকা। তার গলার সুর যেন অমৃত। তার জীবনে তিনি ১০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। এছাড়াও ভারতের ৩৬ টি আঞ্চলিক ভাষায় গান রেকর্ড করেছেন তিনি, এর ছাড়া বিদেশি ভাষাতেও গান রেকর্ড শুধুমাত্র তিনিই করেছেন। ভারতের অন্যতম একজন স্বনামধন্য গায়িকা হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন লতা মঙ্গেশকর।
১৯২৯ সালে ২৮ শে সেপ্টেম্বর ভারতের মধ্যপ্রদেশে ( তৎকালীন সেটি ইন্দোর রাজ্যের রাজধানী ইন্দোর ছিল। বর্তমানে এটি ভারতের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর এবং তিনিই ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন। মুম্বাইয়ের ব্রীচ ক্যান্ডি হাসপাতালে টানা ২৭ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর ২০২২ সালের ৬ ই ফেব্রুয়ারি প্রয়ত হন তিনি।
কিংবদন্তি এই গায়িকার পিতার নাম হল দ্বীননাথ মঙ্গেশকর এবং মাতা শিবন্তী মঙ্গেশকর। গায়িকার পিতা ছিলেন একজন মারাঠি ও কোঙ্কিণী সঙ্গীতজ্ঞ। বিখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁসলে হলেন লতা মঙ্গেশকরের ছোট বোন। এছাড়াও বিখ্যাত এই গায়িকার দুই বোন ও একটি ছোট ভাই রয়েছে। দুই বোনের নাম হল, ঊষা মঙ্গেশকর ও মিনা মঙ্গেশকর এবং ছোট ভাইয়ের নাম হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর।
সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের জীবনে তিনি, ২ টি বিশেষ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ৩ টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ৪ টি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ১৫ টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়ার শখ ছিল গায়িকার। কিন্তু বাড়ি থেকে গান গাওয়ার অনুমতি মিললেও সমস্ত গান শেখার অনুমতি মেলেনি তার। গায়িকার বাবা চাইতেন মেয়ে শুধু ধ্রুপদী গান করুক। আর সেই জন্যই ছোট বেলায় কে এল সায়গল ছাড়া আর কোন গান গাওয়ার অনুমতি মেলেনি তার।
নাম (Name) | লতা মঙ্গেশকর |
জন্ম (Birth) | ২৮ শে সেপ্টেম্বর ১৯২৯ |
মৃত্যু (Death) | ৬ ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ |
পিতা (Father) | দ্বীননাথ মঙ্গেশকর |
মাতা (Mother) | শিবন্তী মঙ্গেশকর |
পুরস্কার |
|
বাদ্যযন্ত্র | কণ্ঠশিল্পী |
ভাই ও বোন |
|
লতা মঙ্গেশকর তার কর্মজীবনে একাধিক পুরস্কার ও খ্যাতি লাভ করেছেন। তার এই কোকিল কন্ঠের জন্য তিনি পদ্মবিভূষণ পুরস্কার এ ভূষিত হন ১৯৯৯ সালে, এছাড়াও পদ্মভূষণ পুরস্কার এ ভূষিত হন ১৯৬৯ সালে, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৮৯ সালে, মহারাষ্ট্র ভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৯৭ সালে এবং তিনি এনটিআর জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৯৯ সালে, জি সিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হন ১৯৯৯ সালে, এএনআর জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হন ২০০৯ সালে। এছাড়াও তিনি, তেইশ বার শ্রেষ্ঠ প্লে – ব্যাক সিঙ্গার পুরস্কার অর্জন করেছেন। বিখ্যাত এই গায়িকা কে তানসেন পুরস্কার এ ভূষিত করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। পাশাপাশি তিনি, হায়দ্রাবাদ, কোলাপুর ও খয়রাগড় এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট খেতাব পেয়েছেন। এছাড়াও ফ্রান্স সরকার ২০০৭ সালে সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর কে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে।
গায়িকার পরিবার থেকে শুধুমাত্র কে এল সায়গল ছাড়া আর কোন গাইবার অনুমতি মেলেনি। তবে যখন লতা মঙ্গেশকরের একটি রেডিও কেনার সামর্থ্য হয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর। কিন্তু রেডিওটা তার জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠতে পারিনি। রেডিওটি তিনি বাড়িতে এনে অন করতেই প্রথম খবরটি তাকে খুবই হতবাক করে দিয়েছিল। রেডিওর প্রথম খবরটি ছিল কে এল সায়গল আর বেঁচে নেই। এই খবর শোনা মাত্রই তৎক্ষণাৎ রেডিওটি ফেরত দিয়া আসেন গায়িকা।
দ্বীননাথ মঙ্গেশকর ও মাতা শিবন্তী মঙ্গেশকরের পাঁচটি সন্তানের মধ্যে লতামঙ্গেসকার ছিলেন সর্বজ্যেষ্ঠ। তবে বর্তমানে তিনি আমাদের ছেড়ে বহু দূরে চলে গিয়েছেন। করোনা আক্রান্তের জন্য ২০২২ সালের ৮ ই জানুয়ারি তাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু পরে তার স্বাভাবিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। এরপর তিনি ২০২২ সালের ৬ ই ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ের ব্রিচ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বিখ্যাত গায়িকা আর আমাদের মধ্যে বেঁচে না থাকলেও তার গান আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে যুগ-যুগান্তর ধরে।
বিখ্যাত এই গায়িকা তার জীবনে একাধিক বাংলা গান করে মানুষের জয় করেছেন। তার কয়েকটি জনপ্রিয় বাংলা গান হল – “একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি” এছাড়াও তিনি গেয়েছেন, “সাত ভাই চম্পা জাগোরে” তার এই কোকিল কন্ঠে গানগুলি সুমধুর হয়ে উঠেছে। তার কোকিল কন্ঠে গাওয়া আরও কয়েকটি গান হল, “ও মোর ময়না গো”, ” বাঁশি কেন হায়”, “নিঝুম সন্ধ্যায়”, “যা রে যারে উড়ে যারে পাখি”। তাঁর আরও একাধিক বাংলা গান রয়েছে, কিন্তু সব গান গুলো এখানে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ Best life quotes in bengali | জীবন নিয়ে উক্তি | নিজেকে নিয়ে উক্তি
মোঃ হেদায়েতুল ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও বাণী - আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব…
প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১০৮ নাম - জগদ্বন্ধু সুন্দর ১৮৭১ সালের ২৮শে এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায়…
হ্যাপি হোলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস বা দোলযাত্রার শুভেচ্ছা বার্তা - বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ।…
মার্ক টোয়েনের উক্তি ও বাণী - মার্ক টোয়েন ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক।…
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী - কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন বিংশ শতাব্দীর প্রধান…
সক্রেটিসের উক্তি ও বাণী সমুহ - সক্রেটিস ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। সক্রেটিসের তেমন কোন…