নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত উক্তি, নেতাজির বাণী | Netaji’s Bani in Bengali
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত উক্তি ও নেতাজির বাণী গুলি আজকের আলোচ্য বিষয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে একাধিক মহান উক্তি দিয়ে গিয়েছেন নেতাজি। নেতাজির বাণী গুলো আজ আমরা তুলে ধরব।
নেতাজি সম্পর্কে কিছু কথা
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম চিরস্মরণীয় কিংবদন্তী নেতা হলেন সুভাষচন্দ্র বসু। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের পাতায় এখনো জ্বলজ্বল করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মহান চরিত্র। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার বাল্যকালের নাম ছিল সুভাষচন্দ্র বসু। তবে তিনি গোটা বিশ্ব জুড়ে নেতাজি নামে পরিচিত। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মনে করতেন ভারতের স্বাধীনতার জন্য গান্ধীজীর অহিংসা এবং সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নীতি যথেষ্ট নয়। যার ফলে নেতাজি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন।
১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে জানুয়ারি বর্তমান উড়িষ্যার কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর পিতা ছিলেন জানকীনাথ বসু এবং মাতা ছিলেন প্রভাবতী দেবী। জানকীনাথ বসু এবং প্রভাবতী দেবী 14 জন সন্তানের মধ্যে নবমতম সন্তান ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় শীর্ষস্থানে উঠে এসেছিলেন তিনি। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লক নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নেতাজি। যেটি ভারতের বামপন্থী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস এর নেতৃত্বে এই দলটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের আত্মপ্রকাশ হয় ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে। তবে মহাত্মা গান্ধী এবং এই দলের অন্য অন্য প্রবীণ নেতা ও সদস্যদের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ার পর এই পদ থেকে সরে আসেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছদ্মনাম –
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছদ্মনাম ছিল সাধক সারদানন্দ। তিনি নিজেকে সাধক সারদানন্দ নামে পরিচিতি দিতেন।
শুধুমাত্র স্বাধীনতার জন্য নয়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাণী আমরা সকলেই অনুসরণ করে থাকি। নেতাজির বাণী দ্বারা আমাদের সকলের মনে অনুপ্রেরণা যোগায়, লড়াই করে বেঁচে থাকার শক্তি যোগায়। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত কিছু উক্তি বলে গিয়েছেন। যা ভারতবাসীর কাছে স্মরণীয়। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক নেতাজির বাণী গুলি –
নেতাজির বাণী | Netaji’s Bani in Bengali –
- “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। শুধুমাত্র রক্ত দিয়েই স্বাধীনতা জয়লাভ করা সম্ভব।”
- “শুধুমাত্র চিন্তার জন্য কারও মৃত্যু হতে পারে কিন্তু সেই চিন্তা আজীবন অমৃত থাকে। একজন থেকে আরেকজনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে সেই চিন্তা।”
- “টাকা পয়সা দিয়ে কখনো স্বাধীনতা জয় করা যায়না। স্বাধীনতার জন্য দরকার সাহস, যা সাহসী পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।”
- “ভারত আমাদের ডাকছে, রক্ত দিয়ে রক্তকে ডাকছে, আর সময় নেই অস্ত্র তোলো, ঈশ্বর চাইলে শহিদের মৃত্যু বরণ করে নেব আমরা।”
- “সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে নেতাজির বাণী, ‘আমাদের দেশের সকলের সমস্যা হল দরিদ্রতা, রোগ, অশিক্ষা, যে দিন মানুষের সামাজিক চেতনা বোধ হবে সেই দিন এই সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে।’”
- ‘সর্বদা সত্যতার মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করতে হবে।”
- “নিজের প্রতি সৎ হলে সারা বিশ্বের প্রতি কেউ অসৎ হতে পারবেনা।”
- “জীবনে প্রগতির আশা ব্যাক্তিকে যেকোনো প্রকার ভয় এবং সন্দেহ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।”
- “কোনও একটা চিন্তনের জন্য একজন মৃত্যুবরণ করতে পারেন। কিন্তু সেই চিন্তনের মৃত্যু হয় না। সেই চিন্তন একজনের মৃত্যুর পর হাজার জনের মধ্যে ছড়িয়ে যায়।”
- “আমরা যখন দাঁড়াব, আজাদহিন্দ ফৌজকে গ্র্যানাইটের দেওয়াল হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা যখন মার্চ করব তখন আজাদহিন্দ ফৌজকে স্টিমরোলার হতে হবে।”
- “যদি জীবনে সংগ্রাম, ঝুঁকি না থাকে , তাহলে জীবন বাঁচাটা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়।”
- “সত্যান্বেষণ না করা পর্যন্ত আমরা চুপ করে বসে থাকব না, বা থাকা উচিত নয়।”
- “বাস্তব বোঝা কঠিন। তবে জীবনকে সত্যতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সত্যকে গ্রহণ করতে হবে।”
- “স্বাধীনতার জন্য নিজের রক্তদিয়ে মূল্য প্রদান করা আমাদের কর্তব্য।”
- “যদি জীবনে সংগ্রাম, ঝুঁকি না থাকে , তাহলে জীবন বাঁচাটা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়।”
- “নরম মাটিতে জন্ম নিয়েছে বলেই বাঙালীর এমন সরল প্রাণ।”
- “মানুষ যতদিন বেপরোয়া ততদিন সে প্রানবন্ত।”
- “প্রকৃতির সঙ্গ না পেলে জীবনটাই বৃথা, ঠিক যেন মরুলোকে নির্বাসনের মত।”
- “স্বাধীনতা কেউ দেয় না, অর্জন করে নিতে হয়।”
- “মনে রাখতে হবে যে সবচেয়ে বড় অপরাধ হল অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ।”
- “জগতের সব কিছু ক্ষণভঙ্গুর। শুধু একটা জিনিস ভাঙে না, সে বস্তু, ভাব বা আদর্শ।”
আরও পড়ুনঃ মহাত্মা গান্ধীর বিখ্যাত উক্তি ও বানী